মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবানের লামা উপজেলায় শশুড় বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ি দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হলেন মংক্যচিং মার্মা (৩৫) নামের এক ব্যক্তি। সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়াস্থ শশুর বাডীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মংক্যচিং মার্মা রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলীর বাঙ্গালখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত মংছুরি মার্মার ছেলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে নির্মম এ হত্যা কান্ডটিকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলোর আন্তঃকোন্দলের জের বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা।

সূত্র জানায়, মংক্যচিং মার্মা রাঙ্গামাটি থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়াস্থ শশুর আথুইমং মার্মার বাডীতে যান। খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে ৫-৬ জনের পাহাড়ি অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে তাকে গুলি করে। এতে মংক্যচিং মার্মা ঘটনাস্থলে মারা যান।

নিহত মংক্যচিং মার্মার স্ত্রী ম্রাবোচিং মার্মা (৩০) বলেন, গত শনিবার আমি বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসি। স্বামী মংক্যচিং মার্মা সোমবার দিবাগত রাত ৭টার দিকে তাকে নিয়ে যেতে অংহ্লাপাড়ায় আসেন। এক পর্যায়ে রাত ১টার দিকে ৬ জন পাহাড়ি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে গুলির পর মৃত্যু নিশ্চিত করে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসীরা গুলি করার সময় মংক্যচিং মার্মাকে বলে, ‘আমাদের টাকা না দিয়ে কেন চলে এসেছিস’। পরে ঘরে রক্ষিত নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

এদিকে স্থানীয়রা ধারণা করছেন, হয়ত নিহত মংক্যচিং মার্মা রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালখালী এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ এমএলপি’র সক্রিয় সদস্য ছিল। তাদের আভ্যন্তরিন কোন্দল ও চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারার জের ধরে এই ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা।

নিহত মংক্যচিং মার্মার শ্যালক অংসিং মার্মা সাংবাদিকদের জানায়, সোমবার দিনগত সাড়ে ১টার দিকে ছয়জন অস্ত্রধারী পাহাড়ী সন্ত্রাসী বাড়ি ঘিরে ফেলে। তারা ঘরের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বোন জামাইকে গুলি করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা তিন রাউন্ড গুলি করে ও কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। সন্ত্রাসীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও রশি ছিলো।

দুর্বৃত্তের গুলিতে মংক্যচিং মার্মা নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কে বা কারা কি কারনে মংক্যচিংকে হত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি খুনীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।